চাঁদে লাগানো গাছটি মরে গেলো কিভাবে ?
অবাস্তব ধারণার বাস্তব রূপ দিতে চীনের নভোযান ‘চ্যাং আ ফোর’ বিশেষ ক্যাপস্যুলে করে কিছু উদ্ভিদের বীজ চাঁদে নিয়ে যায়।
কিছুকাল পরে আসল মন খারাপ করার মত এক সংবাদ! গাছটি আর নেই! নানা প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করেও এটি শেষমেশ টেকেনি। টিকবে কি করে! চাঁদের যে প্রতিকূল পরিবেশ তা গাছের পক্ষে সহ্য করা অসম্ভব।
গাছটি মরে যাওয়ার যে কারণ তা হলো চাঁদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা। এমন এক জায়গায় গাছটি লাগানো হয়েছিল যেখানে টানা দুই সপ্তাহ দিনের আলো আর দুই সপ্তাহ রাতের অন্ধকার থাকে। তাই তো সেখানে তাপমাত্রার পরিবর্তনটাও নাটকীয়। যখন সূর্যের আলো থাকে তখন তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যায়। এই তাপমাত্রায় পানি আর পানি থাকে না, হয়ে যায় বাষ্প।
অন্যদিকে সূর্য না থাকলে তাপমাত্রা নেমে যায় হিমাঙ্কের নিচে যা ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্তও হতে পারে। তাহলে সেখানে লাগানো নিরীহ গাছের পক্ষে হঠাৎ এই পরিবর্তন সহ্য করা একেবারেই অসম্ভব।
এর পরের কারণটা নিম্নচাপ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপের সাথে জীবজগৎ অভ্যস্ত। কিন্তু চাঁদের বায়ুমণ্ডল নাই বললেই চলে। তাই সেখানে পর্যাপ্ত বায়ুর চাপও নেই। তার ওপর নানা ধরণের ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মির উপস্থিতি তো আছেই সেখানে। ফলে পর্যাপ্ত বায়ুর অভাবে এই রশ্মিগুলো মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেয় গাছ টিকে থাকার জন্য।
এছাড়া পৃথিবী থেকে চাঁদে বীজগুলো নেয়ার সময় তাদের ওপর ধকলও কম যায়নি। মহাকর্ষের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড চাপ নিয়ে পৃথিবী পার হতে হয়েছে। পৃথিবী থেকে চাঁদ পর্যন্ত একদম অসুরক্ষিত শূন্যস্থানও পাড়ি দিতে হয়েছে। গাছটি জন্মাতে ও বাঁচাতে সূর্যের আলো প্রয়োজন ছিল। তা পায়নি বলেই এটি মারা গেছে। বরফে জমে যাওয়া থেকে রক্ষা করা গেলে হয়তো গাছটি বেঁচে যেত।
ছবি: প্রতীকী