করোনায় ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ঢাবি শিক্ষার্থী সুমনের মৃত্যু
গত ২৬ মার্চ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন যে, ‘আমার করোনো হয়নি অথচ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোনার জন্যই আমাকে মারা যেতে হবে।’
ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ফুসফুসে টিউমারের অসুখে ভুগতে থাকা সেই সুমন অবশেষে মারাই গেলেন। সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। খবরটি জানা অনেক পরে। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী।
সুমন চাকমা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের ২২-তম ব্যাচের ছাত্র সুমন জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। সুমনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টা খুব দুঃখজনক। খবর পেয়ে আমি তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর চিকিৎসা না পেয়ে এমন অকাল মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন।
বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষার্থী চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় পড়লে যেনো প্রক্টরিয়াল টিমের সাথে বা আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেন। আমরা সার্বক্ষণিক শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলায় সুমন চাকমার বাড়ি। বাবা সুপেন চাকমা একজন কৃষক। সুমন বাবা মায়ের বড় সন্তান। সুমনের সহপাঠী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সুমনের অসুস্থতা দেখা দেয়। দেশের চিকিৎসকেরা জানান, সুমনের ফুসফুসে ক্যান্সার হয়েছে। পরে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, ক্যান্সার না, ফুসফুসে ছোট একটা টিউমার হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সুস্থ বোধ করায় সে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে পড়াশোনা শুরু করে।
কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে সুমনের শরীর আবারও খারাপ হতে থাকে। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সুমনের চিকিৎসা ব্যহত হয়। পরিবারের অভিযোগ, ঢাকার একাধিক হাসপাতালে যোগাযোগ করে কোথাও চিকিৎসা পাননি সুমন। পরে অসহায় পরিবার তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানেই আজ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন এই মেধাবী শিক্ষার্থী সুমন।