এক গুজবে সব শেষ হয়ে গেছে শিশু তুবার
ছোট্ট অবুঝ শিশু তাসলিমা তুবা (৪) মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকতো। এখন আর মায়ের সান্নিধ্য পায় না সে! বুধবার দুপুরে মায়ের স্পর্শ না নিয়েই রায়পুর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় ফিরে গেছে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে। কারণ এক গুজবে সব শেষ হয়ে গেছে তার।
ছোট্ট শিশু তুবা হারিয়েছে তার প্রিয় মাকে। গত শনিবার প্রকাশ্য দিবালোকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যাকারীরা হত্যা করে তুবার মা তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০)।
বুধবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাকে দাফনের পর থেকে মায়ের অপেক্ষায় কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে তুবা ও তার ভাই। আত্মীয়দের আদর সোহাগে কিছুক্ষণের জন্য কান্না থামলেও মায়ের আদর তো আর পাচ্ছে না। তার চোখ সারাক্ষণ খুঁজছে শুধু মাকে। মায়ের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে থেমে থেমে চলছে তার কান্না। কান্নাই যেন এখন তার একমাত্র সম্বল। তার কান্নায় শোক ছড়িয়ে শোকের মাতম চলছে রেনুর স্বজনদের মধ্যেও। আজও তুবা জানে না তার মা কোথায় আছে। কেমন আছে। কেউ জিজ্ঞাসা করলেই বলছে, মা চকলেট আনতে নিচে গেছে।
ইতোমধ্যে ঘটনাটি বেশ আলোড়ন তুলেছে দেশে-বিদেশে। এতে অনেকে তুবা ও তার ভাইয়ের সকল দায়িত্ব নিতে চাইলেও স্বজনরা তা দিতে রাজি নয়। তাদের দাবি নিজেরা না হয় তার বাবাই তাদের মানুষ করবেন মায়ের শেষ ইচ্ছেমতো।
নিহত রেনুর বড় বোন নাজমুন নাহার বলেন, বুধবার সকালে নিহত রেনুর রেখে যাওয়া ১০ বছরের এক ছেলে ও চার বছরের এক মেয়েকে নিয়ে ঢাকা চলে যাচ্ছি। ছেলে ও মেয়ে এখন থেকে আমার কাছেই থাকবে।
তিনি আরও বলেন, গুজব আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। গুজব ছড়িয়ে একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে! এটি মেনে নেওয়া যায় না। আমি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যেন আর কোনও মানুষ এভাবে গুজবের বলি না হয়।