fbpx
হোম আন্তর্জাতিক ইরান না যুক্তরাষ্ট্র…শক্তি কার বেশি ?
ইরান না যুক্তরাষ্ট্র…শক্তি কার বেশি ?

ইরান না যুক্তরাষ্ট্র…শক্তি কার বেশি ?

0

ইরানের জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে । একদিকে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা ইরানের, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিয়েছে।

আর বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের । যদিও সামরিক শক্তিতে ইরানের অবস্থান ১৪তম। দুই দেশের উল্লেখযোগ্য কিছু সামরিক শক্তির দিক যেমন-

সেনাবাহিনী: বর্তমানে ইরানের সক্রিয় সেনা ৫ লাখ ২৩ হাজার। আর সংরক্ষিত সেনার সংখ্যা ৩ লাখ ৫০ হাজার। ইরানের এই ফোর্সকে প্রভাবশালী ফোর্স হিসেবে গণ্য করা হয় ।অন্যদিকে মার্কিন সক্রিয় সেনা সংখ্যা ১২ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ জন। সংরক্ষিত  সেনার সংখ্যা ৮ লাখ ১১ হাজার।

ট্যাংক ও কামান:  ইরানের ট্যাংকের সংখ্যা ১ হাজার ৬৩৪টি। সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৫টি।  কামান রয়েছে ২ হাজার ১২৮টি। পাশাপাশি ৫৭০টি সংক্রিয় কামান ও ১ হাজার ৯০০টি রকেটচালিত কামান (রকেট আর্টিলারি) রয়েছে।অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৬০টি। কামান রয়েছে ৩ হাজার ২৬৯টি। পাশাপাশি ৯৫০টি সংক্রিয় কামান ও ১ হাজার ১৯৭টি রকেটচালিত কামান রয়েছে।

বিমানবাহিনী: ইরানের বিমানবাহিনীতে আকাশ যানের সংখ্যা ৫০৯টি। এর মধ্যে ফাইটার বিমান ১৪২টি, অ্যাটাক বিমান ১৬৫টি, হেলিকপ্টার ১২৬টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১২টি। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ক্ষমতা বিশ্বে প্রথম স্থানে। যার আকাশ যানের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩০৪টি। এর মধ্যে রয়েছে-ফাইটার বিমান ২ হাজার ৩৬২টি, অ্যাটাক বিমান ২ হাজার ৮৩১টি, হেলিকপ্টার ৫ হাজার ৭৬০টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৯৭১টি। রয়েছে বিশ্বের সেরা স্টেলথ ফাইটার (রাডারে ধরা না পড়ে আক্রমণ করতে সক্ষম) এফ-২২ ও এফ ৩৬।

নৌবাহিনী: ইরানের নৌবাহিনীতে ফ্রিগেট রয়েছে ৬টি, করভেট রয়েছে ৩টি এবং সাবমেরিন রয়েছে ৩৪টি। তবে নেই ডেস্ট্রয়ার, রয়েছে ৮৮টি পেট্রোলবোট  ও ৩টি মাইন ওয়্যাফেয়ার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে মোট যানের সংখ্যা ৪১৫টি। এর মধ্যে এয়ার ক্রাফট ক্যারিয়ার রয়েছে ২৪টি, ফ্রিগেট ২২টি, ডেস্ট্রয়ার ৬৮টি, করভেট ১৫টি ও সাবমেরিন ৬৮টি। এছাড়া পেট্রোলবোট ১৩টি ও মাইন ওয়্যাফেয়ার রয়েছে ১১টি ।

পরমাণু: যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ হলেও এখন পর্যন্ত ইরানের বোমা নেই বলে ধারণা করা হয়। মার্কিনিদের হাতে ৭ হাজার ২০০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। তাই পারমাণবিক শক্তির দিক দিয়ে বেশ এগিয়েও আছে যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখযোগ্য এসব শক্তির বাইরেও বিবিসি-আল জাজিরাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম অনুমান নির্ভর প্রতিবেদনে বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার যে ধারণা, তা অনুসারে এ ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানতে সক্ষম।

যেমন- শাহাব-১ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করতে পারবে ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে। শাহাব-২ এর আঘাত করার পরিসীমা ৫০০ কিলোমিটার। ক্বিয়াম-১ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করতে পারবে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে উড়ে গিয়ে। ফতেহ-১১০ এর পরিসীমা ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। জুলফাগার আঘাত করতে পারবে ৭০০ কিলোমিটারের মধ্যে। সবচেয়ে বেশি পরিসীমার ক্ষেপণাস্ত্র শাহাব-৩ আঘাত করতে পারবে ২০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও।

মুলত, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি ২০১৫ সালের একটি পারমাণবিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে। সে বছর ইরান বিশ্বের ছয়টি পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিটি করে। ওই চুক্তির পর ইরান সংবেদনশীল পরমাণু কর্মকাণ্ড সীমিত করতে রাজি হয়। বিনিময়ে দেশটির বিরুদ্ধে আনা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। পাশাপাশি ইরান আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিদর্শনে অনুমতি দেয়। তবে ওই চুক্তি লঙ্ঘন করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম ইরান ইউরেনিয়াম উৎপাদন করছে এমন অভিযোগ এনে ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি দেশটির ওপর অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ আরোপ করে। আর  ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের দিকে ইরানও পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এর পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হয় যুদ্ধের উত্তেজনা।

 

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *