আর মাত্র একদিন পরই পদ্মা জয়, দৃশ্যমান হবে পুরো পদ্মাসেতু !
আর মাত্র একটি স্প্যান বসলেই দৃশ্যমান হয়ে যাবে সম্পূর্ণ পদ্মাসেতু। সেতুতে এ পর্যন্ত ৪০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। ৪১ তম স্প্যান বসালেই ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে। সেতুর শেষ স্প্যানটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার বসার পরিকল্পনা রয়েছে।
পদ্মাসেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ধূসর রঙের সর্বশেষ স্প্যানটি পদ্মাসেতুর উদ্দেশে বুধবার রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। ৪১তম স্প্যানটিকে সেতুর কাঙিক্ষত পিলারে নিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই ব্যবহার করা হচ্ছে।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, নানামুখী চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে সবগুলো স্প্যান বসানো শেষ হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আয়োজন করা হয়নি। তবে চীনা ঠিকাদার কোম্পানি নিজেদের নিয়মে ছোট একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এর মধ্য দিয়েই দৃশ্যমান হয়েছিল পদ্মাসেতু। সেই হিসাব অনুযায়ী ৩ বছর ২ মাস ১০ দিনে সেতুর সব কয়টি স্প্যান বসানো হচ্ছে। ৪০টি স্প্যান বসাতে বন্যা, নদী ভাঙন, চ্যানেলে নাব্যসংকট, করোনাভাইরাস মহামারিসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে উঠতে হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর ৪০তম স্প্যান বসানো হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূল সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ২৮৫টি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ৯৩০টি। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ৩১০টি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, গত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল সেতু কাজের চুক্তি মূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। আর এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোটি টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ ভাগ শেষ হয়েছে। নদীশাসন কাজের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা।
এদিকে অনেক আগেই সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার খাত, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাত, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট ও আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ ৭ হাজার ৭১৬ দশমিক ৯১ কোটি টাকা।
প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকার মধ্যে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ১১৫ দশমিক ২ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৭৯ দশমিক ৮৯ ভাগ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৮২ দশমিক ৫০ ভাগ।