fbpx
হোম অন্যান্য একাদশ নির্বাচনে ৫৮৭ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছেঃ সুজন
একাদশ নির্বাচনে ৫৮৭ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছেঃ সুজন

একাদশ নির্বাচনে ৫৮৭ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছেঃ সুজন

0

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৫৮৭ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ৫৮৬ টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে নৌকায়, আর একটি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে ধানের শীষে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সুজন আয়োজিত ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে, ৭৫টি আসনের ৫৮৭টি কেন্দ্রের সকল অর্থাৎ বৈধ ভোট শুধুমাত্র একজন করে প্রার্থী পেয়েছেন।  অন্য কোনও প্রার্থী ১ ভোটও পাননি।  এই ৫৮৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৮৬টিতে (৯৯.৮৩ শতাংশ) সকল ভোট পেয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং ১টি কেন্দ্রের (০.১৭ শতাংশ) সকল ভোট পেয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী। এই ৭৫টি আসনের ৭৪টিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এবং ১টিতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।

দিলীপ কুমার সরকার জানান, ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে, ৩০০টি নির্বাচনি এলাকার জন্য নির্ধারিত ৪০,১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। আর ৯৬ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে ১,৪১৮টি কেন্দ্রে। এছাড়াও ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ৬,৪৮৪ টি ভোটকেন্দ্রে। ৮০-৮৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ১৫,৭১৯টি ভোটকেন্দ্রে, ৭০-৭৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ১০,০৭৩টি ভোটকেন্দ্রে।

তিনি আরও জানান, শতভাগ ভোট পড়া কেন্দ্রগুলো সম্পর্কে দলভিত্তিক অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় যে, ২১৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৮১টি (৮৪.৯৭%) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বিজয়ী ৯০ জন সংসদ সদস্যের, ২১টি (৯.৮৫%) জাতীয় পার্টি থেকে বিজয়ী ১০ জন সংসদ সদস্যের, ৮টি (৩.৭৫%) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে বিজয়ী ১ জন সংসদ সদস্যের, ২টি (০.৯৩%) বিকল্পধারা বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী ১ জন সংসদ সদস্যের এবং ১টি (০.৪৬%) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে বিজয়ী ১ জন সংসদ সদস্যের নির্বাচনি এলাকার আওতাভুক্ত।

দিলীপ কুমার সরকার বলেন, কোনও ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ার বিষয়টি যৌক্তিকও নয়, কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্যও নয়। কেননা তালিকাভুক্ত ভোটারদের মৃত্যুবরণ, দেশের বাইরে অবস্থান, জরুরি কাজে এলাকার বাইরে অবস্থান, অসুস্থতা ইত্যাদি খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়া যে কোনও যুক্তিতেই স্বাভাবিক নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, শতভাগ ভোট পড়া স্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। পাশাপাশি তিনি এও বলেছেন এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের করার কিছু নেই। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে বলেছেন, যেহেতু শতভাগ ভোটের মধ্যে বাতিল ভোটও রয়েছে, তাই এটাকে শতভাগ ভোট পড়া বলা যাবে না। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন।

মূল প্রবন্ধ শেষে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের নির্বাচনি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং নির্বাচনের প্রতি মানুষের অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের রাস্তা রুদ্ধ হয়ে গেলে তা কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। ইভিএম-এর সঙ্গে অন্য আসনগুলোর ভোটের শতকরা হারে কেন এত তফাত হলো কমিশনের পক্ষ থেকে তার একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার দরকার ছিল। আদালতের রায় অনুযায়ী, নির্বাচনে অনিয়ম হলে সেটি তদন্ত করে কমিশন চাইলে সে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করতে এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। কমিশন বলছে, নির্বাচনের অনিয়ম তদন্ত করবে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু কমিশন কেন আগে থেকে পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে ফলাফলের এ অস্বাভাবিকতা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুজন সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট এবং সুজন নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবুল মকসুদ, সুজন নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, ড. শাহদীন মালিক প্রমুখ।

 

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *