fbpx
হোম রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে মানুষের ভোটাধিকার|: ড. কামাল

পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে মানুষের ভোটাধিকার|: ড. কামাল

0

মানুষের ভোটাধিকার লুণ্ঠন করা হয়েছে। হরণ করা হয়েছে গণতন্ত্র। স্বৈরতন্ত্রের খোলসের ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার আজ মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণ দরকার। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন রাতের আঁধারে লুট হয়ে যাওয়া মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।

তিনি আরও বলেন, দেশ আজ একটি দল ও পরিবারের হাতে জিম্মি। কোথাও কাউকে জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে না। বিনা ভোটে জয়ী হওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন এবং এ সংক্রান্ত বিধিবিধান থাকলে অনেক সংকটই এড়ানো যেত। ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, চলমান রাজনীতিসহ দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণের শাসন। আর এই শাসন ব্যবস্থা আবর্তিত হয় মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে। ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’-এটাই মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার মূল শর্ত। দুর্ভাগ্য মানুষ এখন আর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছে না। এমনকি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটও দিতে পারছে না। আমরা দেখলাম, দিনের ভোট আগের দিন রাতেই হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার হরণ করা হলো। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে এর চাইতে বড় লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আর এসব দেখে তিনি নিজেও লজ্জিত হতেন।

তিনি জানান, গণতন্ত্র বলেন, আইনের শাসন বলেন, সুশাসন বলেন, জবাবদিহিতা বলেন-এর সবকিছুই নির্ভর করছে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করার ওপর। সে অধিকার এখন আর এ দেশের মানুষের নেই, কিংবা গায়ের জোরে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই সবার আগে লুট হয়ে যাওয়া ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। সরকারি প্রভাবমুক্ত, কারসাজিমুক্ত নির্বাচন। কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের পছন্দের মানুষকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই বঙ্গবন্ধু আজীবন লড়াই করেছেন। জীবন দিয়েছেন। অথচ তার হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ আইয়ুব-ইয়াহিয়ার পথ অনুসরণ করে গণমানুষের এই মৌলিক অধিকারটাই হরণ করেছে।

ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রয়োজন ছিল আইন প্রণয়ন। সংবিধানেও সেই কথা বলা আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আজও আইনটি হয়নি, বিধিবিধান হয়নি। কোনো সরকারই এই আইন প্রণয়নে উদ্যোগ নেয়নি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি একজন ভালো মানুষ। সজ্জন মানুষ। এর আগেও তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসি গঠন নিয়ে সংলাপ করেছেন। এবারও করছেন। ফলাফল কী হবে, মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে কিনা-তা সময়ই বলবে। তবে অতীত অভিজ্ঞতা যে সুখকর ছিল না-তা আমরা সবাই জানি, দেখেছিও। বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠাতে পরিণত হয়ে সরকারের একের পর এক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। আগামী ইসিও যে একই পথে হাঁটবে না, এর নিশ্চয়তা কে দেবে?

ড. কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার তো চাইবে আরও একটি আজ্ঞাবাহী ইসি গঠন করতে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে আজ্ঞাবাহী প্রশাসন। যাদের দিয়ে তারা আগামী দিনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাবে। এটা প্রতিহত করতে সবার আগে প্রয়োজন জনগণের ঐক্য। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য। এই ঐক্যের মধ্য দিয়ে প্রয়োজন সংবিধানের আলোকে একটি আইন ও বিধিবিধান প্রণয়নে সরকারকে বাধ্য করা। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও শক্তিশালী ইসি গঠনের দাবি আদায় করা এবং পরবর্তীতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রশাসনিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা। এটি না করা পর্যন্ত আমরা ক্রমাগত অন্ধকারের দিকেই হাঁটব। মানুষের অধিকার বলে কিছু থাকবে না।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *