ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় নির্মমভাবে খুন হলো নৈশপ্রহরী
কিশোরী ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় কুমিল্লার চান্দিনায় পরিকল্পিতভাবে এক নৈশপ্রহরীকে খুন করা হয় ।
নৈশপ্রহরী মো. নাছির উদ্দিনকে (২৬) খুনের ১০ দিন পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ । আজ সকাল ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে ওই হত্যার বিস্তারিত জানিয়েছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মো. নূরুল ইসলাম ।
পুলিশ জানায়, বীভৎস এই হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তবে খুনের ঘটনাটিতে সামান্য একটু রক্তের দাগ ছাড়া কোন ক্লু ছিলোনা । খুনিরা হলেন- উপজেলার নাওতলা গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সানাউল্লাহ (২০) এবং বাখরাবাদ গ্রামের মাদুল মিয়ার ছেলে মোফাজ্জেল ওরফে মোয়াজ্জেম (২৪) ।
হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণে তিনি জানান, দুই আসামি সানাউল্লাহ ও মোয়াজ্জেম একই এলাকার বাসিন্দা । তারা দু’জনেই ছিল অটোরিকশা চালক । ঘটনার দিন অর্থাৎ ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে দশটার সময় সানাউল্লাহ নিহত নাছিরের দোকানে চা খাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় । নিহত নাছিরের বাবা অসুস্থ থাকায় সেদিন সে নৈশপ্রহরীর দায়িত্বে ছিল ।
দোকানে যাওয়ার পরে একই গ্রামের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে জরিমানা দেওয়ার ঘটনায় নাছির সানাউল্লাহকে ভর্ৎসনা করে । নাসির এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদের দ’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় । পরবর্তীতে সানাউল্লাহ ও মোয়াজ্জেম দু’জনে মিলে নাছিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে । সানাউল্লাহ বলে যখন সে নাসিরের ওপর আক্রমণ করবে, তখন মোয়াজ্জেম দোকানের বিদ্যুতের লাইন খুলে দেবে ।পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিন রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার দিকে আসামি দোকানে যায় । এ সময় মোয়াজ্জেম তার দোকানের বৈদ্যুতিক লাইনের তার খুলে দেয়। পরে দোকানে থাকা একটি বটি দিয়ে তার মাথায় কোপ দেয় । এ সময় নাছির চিৎকার করে ওঠে এবং জীবন বাঁচানোর জন্য দোকান থেকে দৌড় দেয় । এতে মহাসড়কের ওপরে চলে গেলে অজ্ঞাত একটি ট্রাক/বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় । এরপর আসামিরা ওই রক্তাক্ত বটি নাছিরের দোকানের চা ধোয়ার পানিতে ধুয়ে পরিস্কার করে এবং তারা বাড়িতে চলে যায় । পরবর্তীতে ধারণা করা হচ্ছে সারারাত মহাসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করা গাড়ির চাকায় একের পর এক পিষ্ট হয়ে নাছিরের মরদেহটি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে । আসামিরা পুরো ঘটনাটি স্বীকার করেছে বলে জানান তিনি ।