আর মাত্র ৫টি স্প্যান বসলেই স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়িত !
পদ্মাসেতু একটি স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের সঙ্গে দুলছে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা। এরই মধ্যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন প্রায় শেষের পথে। শুক্রবার সকাল ৯টা ৪২মিনিটে ৩৬তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুটির ৫ হাজার ৪০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। আর মাত্র পাঁচটি স্প্যান বসলেই দৃশ্যমান হবে সেতুটির কাঙ্ক্ষিত ৬ হাজার ১৫০ মিটারের অস্তিত্ব।
সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের জানান, দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিলারের উপর সফলভাবে ৩৬তম স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্প্যান নিয়ে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই নির্ধারিত পিলারের উদ্দেশে রওনা হয়, পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্ধারিত পিলারের কাছে স্প্যান পৌঁছায়। এরপর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা স্প্যানটি বসানোর কার্যক্রম শুরু করেন।
এদিকে, আগামী ১১ নভেম্বর ৯ ও ১০ নম্বর পিয়ারে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর ১ ও ২ নম্বর পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া সেতুর ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৪১টির বেশি রোড স্ল্যাব বসানো হয়েছে। আর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে বসানো হয়েছে ১ হাজার ৫০০টির বেশি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মাসেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৬টি স্প্যান। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হবে।
সবগুলো পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। আগামী ২০২১ সালেই পদ্মাসেতু খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।