fbpx
হোম রাজনীতি ঢাবি ক্লাবে গভীর রাতে রিজভীর ‘গোপন বৈঠক’, শিক্ষককে শোকজ
ঢাবি ক্লাবে গভীর রাতে রিজভীর ‘গোপন বৈঠক’, শিক্ষককে শোকজ

ঢাবি ক্লাবে গভীর রাতে রিজভীর ‘গোপন বৈঠক’, শিক্ষককে শোকজ

0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাব) ক্লাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর গভীর রাতে অবস্থান করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ক্লাবের সদস্য ও ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছারকে আহ্বায়ক করে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ক্লাব কর্তৃপক্ষ ক্লাবের সভাপতি বিএনপি সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষক এবিএম ওবায়দুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।

ঢাবি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রহীম সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক একজন নেতার সঙ্গে ক্লাবে বৈঠক করার বিষয়ে জানতে চেয়ে এই নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এদিকে, ঢাবি ক্লাবে ‘গোপন বৈঠকে’ রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত অভিযোগ করে রিজভী ও ওবায়দুলের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বক্তব্য দেন- সংগঠনের ঢাবি শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মাহিম, সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রহুল আমিন মজুমদার ও বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু।

সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘গভীর রাতে ঢাবি ক্লাবে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপি-জামাতপন্থী সাদা দলের শিক্ষক এবিএম ওবায়দুল ইসলামের নেতৃত্বে অছাত্রদের সংগঠন ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী গোপন বৈঠকে বাঙালি জাতির দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে বানচাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলানোর গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা কখনোই মেনে নেবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ঢাবিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে সিসি টিভির ফুটেজগুলো দেখে অবিলম্বে এই গোপন বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে ষড়যন্ত্রের প্রকৃত তথ্য জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে কটূক্তির অপরাধে চাকরিচ্যুত শিক্ষক ও বিএনপি নেতা মোর্শেদ হাসান খান অবৈধভাবে এখনো ঢাবি আবাসিক ভবনের বাসায় বসবাস করছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিপন্থী। অবিলম্বে তার বাসা বরাদ্দ বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের মূলহোতা স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাতের দোসর ওবায়দুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে। বাঙ্গালি জাতির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বানচাল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত রুহুল কবির রিজভী, ওবায়দুল ইসলাম ও মোর্শেদ হাসান খানকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিসি টিভির ফুটেজ দেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে এখনো কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না? ঢাবি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাওসহ আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ওবায়দুল ইসলাম ও মোর্শেদ হাসান খানসহ অছাত্রদের সংগঠন ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদেরকে খুব শিগগিরই সমুচিত জবাব দেয়া হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাবি কখনোই সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হতে পারে না।’

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ঢাবি ক্লাবে নিয়মবহির্ভূতভাবে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত খুনি জিয়ার দোসর রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপি-জামাতপন্থী সাদা দলের শিক্ষক এবিএম ওবায়দুল ইসলামসহ অছাত্রদের সংগঠন ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে কটূক্তিকারী বিএনপি নেতা ও চাকরিচ্যুত শিক্ষক মোর্শেদ হাসানের বাসা বরাদ্দ দ্রুত বাতিল করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো টালবাহানা করলে মোর্শেদ হাসান খানকে ঢাবি ক্যাম্পাসের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’

সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, ‘শান্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার পাঁয়তারা চলছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে বানচাল করার জন্য রিজভী গংরা হলগুলোতে লাশ ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ঢাবি ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে গভীর রাতে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের নিয়ে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে প্রমাণ হয় বিএনপি একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন। মোর্শেদ হাসান খান ও ওবায়দুল ইসলাম গংরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মদদদাতা। গভীর রাতের গোপন বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে গ্রেফতার করে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কারণ এরা দেশ ও জাতির শত্রু। রিজভী কেন গভীর রাতে ঢাবি ক্লাবে ঢুকে গোপন বৈঠক করলেন? এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব কেন? দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

প্রসঙ্গত, ক্লাবের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রিজভী গত রোববার (১৯ জুন) রাত ১১টা ১৭ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে প্রবেশ করেন। তিনি সেখানে রাত একটা পর্যন্ত অবস্থান করেন। ওই সময় ক্লাবে তার সঙ্গে ঢাবির বিএনপি সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও ক্লাবের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *