কুতুবদিয়ায় সাগরের তলদেশ দিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ !
দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় সাগরের তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ নিচ্ছে সরকার। দীর্ঘ পাঁচ কিলোমিটার সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে এ বিদ্যুৎ যাবে। আর এর মাধ্যমেই জাতীয় গ্রিডের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে এই দ্বীপ। ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে এ প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।
উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ- তিন দিকে বঙ্গোপসাগর আর পূর্বে কুতুবদিয়া চ্যানেল। মধ্যখানে প্রায় ২১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে সাগরের বুকে ভেসে থাকা একটি দ্বীপ কুতুবদিয়া। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কুতুবদিয়া উপজেলার লোকসংখ্যা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৮৮ জন। বর্তমানে দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এ হিসাবে ৩০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ দিলে পুরো এলাকা কাভার করবে। কারণ গড়ে একজন গ্রাহক থেকে ৬ থেকে ৭ জন বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবেন। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭ এমভিএ বা ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। এসবের মাধ্যমে ৪২ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইপিপিপির মাধ্যমে হাতিয়া দ্বীপে ৮ থেকে ১০ মেগাওয়াট তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুতায়ন করা হবে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে হাতিয়া থেকে চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে পারাপার করে নিঝুম দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। আর মগনামা হতে চ্যানেলের তলদেশ দিয়ে পারাপার করে কুতুবদিয়া দ্বীপেও শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) নির্মাণ করা হবে হাতিয়া দ্বীপে। এর পরে হাতিয়া থেকে নিঝুম দিয়ে ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বিতরণ অঞ্চল, বিউবো, চট্টগ্রাম) মো. শামছুল আলম বলেন, মাতারবাড়ী নতুন বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট থেকে সাবমেরিন ক্যাবেলের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ যাবে। সন্দ্বীপের মতো আধুনিক ভারি ক্যাবল ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
জানা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে বিদ্যুৎ বিভাগের অঙ্গীকার পূরণের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ২০২১ সালের মধ্যে সারাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালের মধ্যে পার্বত্য অঞ্চল, দ্বীপাঞ্চল-চরাঞ্চলসহ সব এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে পাওয়ার সেল ও বিদ্যুৎ বিভাগের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) অধীনে হাতিয়া দ্বীপে ২ হাজার ৫৫৮ জন এবং কুতুবদিয়া দ্বীপে ১ হাজার ২০০ জন গ্রাহক রয়েছে। তবে নিঝুম দ্বীপে কোনো গ্রাহক নেই।