এজলাসে আসামির মাথায় আইএসের টুপি!
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা মামলার আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বাকি একজন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান খালাস পেয়েছেন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এ হামলা মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও সংক্ষুব্ধ হয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আসামি পক্ষের আইনজীবী দোলোয়ার হোসেন বলেন, রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। সাক্ষীদের নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
এদিকে রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসানের মাথায় জঙ্গি সংগঠন ‘আইএসের টুপি’ দেখা গেছে। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীর হোসেনের মাথাও আইএস-এর টুপি দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ইতোমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কারাবেষ্টনির মধ্যে কিভাবে আসামিদের মাথায় এ ধরনের টুপিটা এলো?
আসামি রাকিবুল হাসার রিগান এজলাসে বসা অবস্থায় টুপি পড়া ছিলেন। তবে ওই টুপিতে আইএসের লোগো ছিল না। রায় ঘোষণার পর বের হওয়ার সময় তার মাথায় আইএসের টুপি দেখা যায়। প্রিজনভ্যানে ওঠার সময় ‘আল্লাহ হুআকবার’ আল্লাহ হুআকবার’ বলে স্লোগান দেন। এ রায় অন্যায় এ রায় মানি না বলেও চিৎকার করেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার খান জাকির বলেন, আসামিদের মাথায় আইএসের টুপি ছিল কি না তা আমি জানি না। ভিডিওতে দুইজন আসামির মাথায় আইএসের টুপি দেখা গেছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, আমিও অনলাইনে দেখেছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী দোলোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের মাথায় আইএসের টুপি কিভাবে আসছে সেটা আমার জানা নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা এ বিষয়ে বলতে পারবেন।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলোচিত এ হামলার রায় পড়া শুরু করেন। তার আগে ১২টার দিকে মামলার মোট আট আসামিকে আদালতে তোলা হয়। রায়ে আট আসামির মধ্যে সাতজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন বিচারক। বাকি একজন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান খালাস পেয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন, আসলাম হোসেন র্যাশ, মো. হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মো. আব্দুল সবুর খান, শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামুনুর রশীদ রিপন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করে পুলিশ।
দণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি ছাড়াও বিভিন্ন অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়।