fbpx
হোম আন্তর্জাতিক লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফার ময়দান
লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফার ময়দান

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফার ময়দান

0

আজ পবিত্র হজ। আরাফাতের পাহাড় ঘেরা প্রান্তর আজ ঢেকে গেছে শুভ্রতায়। ধনী-গরিব, আশারাফ-আতরাফ সকলেরই দীন-হীন বেশ। তাদের দেহ মোড়ানো এহরামের শ্বেত শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়। প্রতি মুহূর্তে তাদের ভীতু-কম্পিত হূদয়মথিত সুউচ্চ কণ্ঠে বিঘোষিত হচ্ছে তালবিয়া।“ লাব্বাইক! আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’ মাতা লাকা ওয়ালমুলক লা শারিকা লাক…. (আমি হাজির! ও আল্লাহ! আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সমস্ত প্রশংসা এবং নিয়ামত শুধু তোমারই, বিশ্ব-সমগ্র সাম্রাজ্যও শুধুই তোমার, তোমার কোনো শরিক নেই)। এই মধুধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে আরাফাতের ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত করছে। রচিত হচ্ছে এক স্বর্গীয় আবহ। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ পালন করেছেন।

আজ ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত লাখ লাখ মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। আজ ৯ জিলহজ মূল হজের দিন এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরো প্রায় পৌনে এক মাইল বিস্তৃত। মুসলমানদের অতি পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আছরের নামাজ পড়বেন। আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন গ্র্যান্ড ইমাম। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তা’আলার জিকির আসকার ইবাদতে মশগুল থাকবেন। অতঃপর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশা’র নামাজ এশা’র ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মীনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মীনার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। ১০ জিলহজ মীনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়ো, মধ্যম ও ছোটো শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে ক্বাবা শরীফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাত্ ক্বাবা শরীফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

এদিকে গতকাল সারাদিন এবং গত রাতে হজযাত্রীরা মিনায় অবস্থান করেন। সেখানেই শুরু হয় পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। প্রতি বছর হজের সময় মুসলমানদের অস্থায়ী আবাস হিসেবে মিনায় বসানো হয় লাখ লাখ তাঁবু। পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার অদূরের মিনা যেন তাঁবুর শহর। যেদিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। তাঁবুতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ফোম, বালিশ, কম্বল বরাদ্দ। ফোমের নিচে বালু। মিনায় অবস্থান করা হজের অংশ। হজযাত্রীরা নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন।

এদিকে আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের খুতবা দেওয়া হবে। প্রতি বছর বাংলাদেশ টেলিভিশন হজের এ খুতবা সরাসরি সম্প্রচার করে। এ বছর খুতবা দেবেন নতুন শাইখ ড. মুহাম্মদ বিন হাসান আল-শাইখ।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
1

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *