বসনিয়ায় মানব পাচারের খপ্পরে শত শত বাংলাদেশি
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলো গত বুধবার ক্রোয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী ভেলিকা ক্লাদুসা শহরের কাছের বনে ও পরিত্যক্ত ভবনে বাংলাদেশিসহ অন্তত ৫০০ অভিবাসন প্রত্যাশী আটকে পড়ার খবর জানিয়েছিল।
বসনিয়া-হার্জেগোভিনার জঙ্গল ও পরিত্যক্ত ভবনে অভিবাসন প্রত্যাশী তিন শতাধিক বাংলাদেশি আটকা পড়েছে। প্রচণ্ড শীতে পলিথিনের ছাপড়া তুলে ক্রোয়েশিয়া সীমান্তের কাছে অপেক্ষমাণ এসব অভিবাসীর শেষ গন্তব্য ছিল ইতালি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনার প্রধান পিটার ভন ডার অরায়ের্ট গত শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বলেছেন, সেখানে অপেক্ষমাণ অভিবাসীদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি টুইটে বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিডিও দিয়ে এ তথ্য জানান।
পিটার ভন ডারের বক্তব্যের সমর্থনে বসনিয়া ও নেদারল্যান্ডসের কূটনৈতিক সূত্রগুলো শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, ক্রোয়েশিয়া সীমান্তবর্তী ভেলিকা ক্লাদুসায় অবস্থানরত লোকজনের মধ্যে অন্তত ৩০০ বাংলাদেশি রয়েছে।
বসনিয়া ও অস্ট্রিয়ার কূটনৈতিক সূত্র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও ইন্টারপোলের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছর দু-এক ধরে বলকানের দেশ বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া আর ক্রোয়েশিয়াকে বেছে নিয়েছে মানব পাচারকারীরা। এই দেশগুলো এখন আন্তর্জাতিক মানব পাচারের প্রধান পথ হয়ে উঠেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে অন্তত দেড় হাজার বাংলাদেশি ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বলকানের ওই চার দেশে পৌঁছান। এঁদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ৩০০ বাংলাদেশি গেছেন বসনিয়ায়। গত বুধবার ক্রোয়েশিয়া সীমান্তবর্তী বসনিয়ার জঙ্গল আর পরিত্যক্ত ভবনে যে ৫০০ অভিবাসীর উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে, তাঁদের বড় অংশই বাংলাদেশের নাগরিক।
বসনিয়ার জঙ্গলে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সবশেষ অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ গতকাল শনিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্রোয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী ভেলিকা ক্লাদুসার জঙ্গলে বাংলাদেশিদের বিষয়ে বসনিয়ার সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো তথ্য পাইনি।
তবে দেশটিতে বাংলাদেশের অনারারি কনসাল হারুদিন সমুন অসমর্থিত সূত্রের উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ভেলিকা ক্লাদুসার জঙ্গলে অবস্থানরতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিক বাংলাদেশের।’
বসনিয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রধান পিটার ভন ডার অরায়ের্টকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক এক সংস্থার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইতালি পাড়ি দিতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের লোকজনের বসনিয়ায় পৌঁছানোর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
সূত্র: প্রথম আলো।