fbpx
হোম অন্যান্য মৃত্যু নিয়ে এরশাদের লেখা কবিতা
মৃত্যু নিয়ে এরশাদের লেখা কবিতা

মৃত্যু নিয়ে এরশাদের লেখা কবিতা

0

মৃত্যুর স্বাদ প্রত্যেককে নিতে হবে, এমন চিরন্তন সত্যকে কেউ মিথ্যা করতে পারবেনা। হোক সে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি,রাজা কিংবা দুনিয়ার অধিপতি। মৃত্যু নামক এই দৃশ্যমান অবস্থা বরণ করতেই হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
রবিবার সকাল পৌনে আটটায় সেই ডাকেই সাড়া দিয়ে চলে গেছেন সকল বন্ধন ছেড়ে। মৃত্যুকালে যাঁর বয়স হয়েছিল ঊননব্বই বছর। কিন্তু মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কেমন ছিল তাঁর উপলদ্ধি? সে উপলদ্ধি থেকেই তিনি জন্ম দিয়েছিলেন একটি কবিতা। যেটি তিনি ২০১৭ সালে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রচনা করেছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লেখা সেই কবিতাটি চেঞ্জ টিভির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
সময়ঃ সিঙ্গাপুর-২৯ অক্টোবর, ২০১৭।

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
মৃত্যুকে আর আমার কোনো ভয় নেই-
যাকে আমি দেখেছি- একবার নয়,
একাধিকবার খুব কাছে থেকে
একেবারে একান্তভাবে- আলিঙ্গনরত
প্রিয়তমার মতো। সৈনিক ছিলাম
মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে- শিখেছি তখন। বন্দিজীবনে পাণ্ডু–রোগকে আজরাইল রূপে দেখেছি- আল্লাহতায়লার ভর্ৎসনায় ফিরে গেছে আমাকে না নিয়েই- তারপর ভেবেছিলাম- স্রষ্টার কিছু কাজ
হয়তো এখনো বাকি রয়ে গেছে- সেটুকু
করার দায়িত্ব নিতে হবে আমাকেই- আমার দেশের জন্য- আমার অসহায় মানুষের জন্য।
শুরু করলাম নতুন যাত্রা- দুর্গম পথে
যে পথে চলতে গিয়ে কখনো বা হয়ে যাই ক্লান্ত-শ্রান্ত-অবসন্ন।
তখন ভাবনাগুলো চারপাশে ভিড় জমায়। জীবন সায়াহ্নে আর কত কি কাজ আছে বাকি?
সেই চিন্তার মাঝে মৃত্যু নামের
অবধারিত সত্যের নোটিশ আসে-
যেতে হয় অপারেশন থিয়েটারে।
সেখানে ভুলতে হয়- পৃথিবীর সব
মায়া-মমতা-প্রেম-ভালোবাসা,
আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জন,
জীবন প্রবাহ, ইতিহাস, অতীত-বর্তমান,
কর্মের তাগিদ সব হিসাব-নিকাশ-
জীবন আর মৃত্যুর এই সংযোগ স্থলে।
চিন্তার কোনো অবকাশ নেই সেখানে-
ঠিক যেনো মৃত্যুর মতো- এখানে এসে
আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
সেখানেও বিধাতা আমাকে জাগিয়ে দিলেন-
আবার জেগে দেখি সেই আলো-
সেই বাতাস- সেই প্রিয় আপনজনেরা-
যারা আমার জন্য প্রার্থনায় বসে ছিলো-
মসজিদে-দেবালয়ে দু’হাত বাড়িয়ে।
তাদের প্রার্থনার হাত খালি হয়ে
ফিরে আসেনি করুণাময়ের দরবার থেকে। মৃত্যু আমাকে আবার জানিয়ে দিয়ে গেলো-
‘আমি নিতে চাইলে কি হবে- তোমার
ভালোবাসার মানুষেরা তো যেতে দেয় না তোমাকে-
তাদের দোয়া যে কবুল হয়ে গেছে।’
আজ আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা- দেশের সকল মানুষের কাছে- চিরদিনের ঋণ তাদের কাছে যারা আমার জন্যে হাত পেতে নিয়ে এসেছে আরো কিছু আয়ু, আরো এক নতুন জীবন।

Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
2

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *