বাংলাদেশে বাড়ছে শিশু ধর্ষণের ঘটনা
গত ৬ মাসে সারা দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত শিকার হয়েছে ৫৩৭ জন শিশু, হত্যা করা হয়েছে ২০৮ জনকে। আশঙ্কাজনক এ পরিসংখ্যান দিয়েছে বেসরকারি সংগঠন শিশু অধিকার ফোরাম। যা গত বছরের তুলনায় গড় হিসেবে ৪১ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা উৎসাহিত করছে মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তিদের। রাষ্ট্রের পাশাপাশি পারিবারিকভাবে জোরালো ভূমিকা রাখর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তারা।
সম্প্রতি একের পর এক শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার মত ঘটনায় আতঙ্কিত বাবা-মায়েরা। শিশু সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই তাদের। বাসাবাড়ি-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবখানেই নিরপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকরা।
শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিশু অধিকার ফোরাম গণমাধ্যমে উঠে আসা শিশু নির্যাতনের খবরের ভিত্তিতে জানিয়েছে, গতবছরের প্রথম ছয়মাসের তুলনায় এ বছর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা বেড়েছে ৪১ শতাংশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৩৭ জন, যার মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২০৮ জন শিশুকে। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৩টি শিশু। গবেষণা সংস্থাটি বলছে, শিশু ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতনের প্রকৃত সংখ্যা গণমাধ্যমে আসা রিপোর্টের চাইতে অনেকগুণ বেশি।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব ঘটনার মূল কারণ, সামাজিক অবক্ষয় আর বিকৃত মানসিকতা। তাদের মতে, অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের প্রতি আকর্ষণের মাত্রা অসুখের পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম বলেন, যারা শিশুদের ধর্ষণ করে সেটা একটা রোগ। এই রোগকে বলা হয় পেডোফেলিয়া এবং এটার সংখ্যা নিশ্চয় বাংলাদেশে বাড়ছে। অন্যদিকে পর্নোগ্রাফিও এর জন্য দায়ী।
শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুস শহিদ মাহমুদ বলেন, এই ধরণের অপরাধ যারা করেন তারা বিচারহীনতার জন্যই সাহস পান।
এ থেকে পরিত্রাণে, পারিবারিক ও সামজিকভাবে সচেতনতা ছাড়াও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আইনের কঠোর প্রয়োগের কথা বলেছেন তারা।
শহিদ মাহমুদ বলেন, শিশুদের ধর্ষণ, খুন ও অপহরণ যারা করবে তাদের বিচারের জন্য বিশেষ আইন থাকা উচিত।
সাদেকা হালিম বলেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতাও এর অন্যতম একটি কারণ।