২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন আজ
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একজন ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা। একটি বাণিজ্যবান্ধব বাজেটই তার নিকট প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে যে, আসন্ন বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে না। তবে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর কর বাড়ানোর প্রস্তাব আসছে বাজেট ঘোষণায়। আশার কথা যে, শেয়ারবাজারে মুনাফার ওপর করমুক্ত আয়সীমা দ্বিগুণ হচ্ছে। আবাসন খাতে নিবন্ধন ব্যয় কমছে। বাড়বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের খরচ। মোবাইল কোম্পানিগুলোর বিক্রীত সিমের পরিমাণ এখন ষোল কোটির মতো। এগুলোতে ব্যবহূত ইন্টারনেটের খরচ বাড়ানোর ঘোষণা থাকছে নতুন বাজেটে।
অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিদ্যমান সুযোগ থাকছে। তবে আরো কিছু ছাড় ক্ষেত্র ভেদে হতে পারে। যা অর্থমন্ত্রীর আজকের ঘোষণায় স্পষ্ট হবে। বহুল আলোচিত সংশোধিত ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে। এটি স্তরভিত্তিক হওয়ায় কিছু পণ্যে ভ্যাট হার বাড়বে। তবে বিশেষ কিছু পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে স্পেসিফিক ভ্যাট নাম দিয়ে নমনীয় হারে ভ্যাট আদায়ের ব্যবস্থা থাকছে। দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় সম্পূরক শুল্ক অন্যতম হাতিয়ার। আমদানিকারকদের দাবি থাকলেও তাতে নজর দেননি অর্থমন্ত্রী। রাজস্ব আওতা বৃদ্ধি এবং কর ফাঁকি রোধে অনলাইনে ভ্যাট আদায়ের অবকাঠামো তৈরি করা, ইসিআর মেশিন আরো বেশি কার্যকর করাসহ নানা পরিকল্পনার কথা বলবেন অর্থমন্ত্রী।
আসন্ন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮.২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ৮.১৩ শতাংশ অর্জিত হবে বলে ইতোমধ্যে খসড়া হিসাব করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এছাড়া নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ৫.৫ শতাংশে আটকে রাখার পরিকল্পনা থাকছে।
বাজেটে যেসব খাতে সংস্কারের প্রস্তাব করা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ থাকছে। এছাড়া প্রথমবারের মতো উদ্যোগ থাকবে বেকারদের ‘স্ট্যার্ট আপ ফান্ড’ নামে একটি তহবিলের। ১০০ কোটি টাকার এ তহবিল থেকে স্বল্পসুদে সহজশর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন নতুন উদ্যোক্তারা। এর বাইরে নতুন উদ্যোগের মধ্যে থাকছে প্রবাসীদের জন্য বীমা সুবিধা।
বাজেটে বড় আকারের ব্যয় মেটাতে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাকিটা এনবিআর বহির্ভূত উৎস থেকে আদায় করার লক্ষ্য থাকছে। সবমিলিয়ে অনুদানসহ আয় হবে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশের সমান।
আগামী অর্থবছরের বাজেট সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ (অনুদানসহ) দাঁড়াবে ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ হবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। তবে অন্য বছরের মতো জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যেই রাখা হয়েছে ঘাটতির আকার।