
দিলদার এখনও প্রযোজকদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাওনা
ঢালিউড সিনেমায় একসময় হাসিয়েই অসংখ্য দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেতা দিলদার। এমনকি এখনও যখন কেউ কাউকে হাসায় তাকে ‘দিলদার’ উপাধি দেয়া হয়। শনিবার (১৩ জুলাই) ছিল গুণি এই অভিনেতার ২১তম প্রয়াণ দিবস। ২০০৩ সালের এই দিনে ৫৮ বছর বয়সে দিলদারের মৃত্যু হয়।
সংবাদাধ্যম অনুযায়ী, ২০ বছর বয়সে দিলদার তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তার পর থেকেই নিজের জগৎ চেনাতে থাকেন এই অভিনেতা। বাংলা সিনেমায় কৌতুক অভিনেতা হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষতার ছাপ রেখেছেন।
১৯৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা দিলদার। পারিবারিকভাবে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রী ও দুই কন্যা বেঁচে আছেন।
এক সাক্ষাৎকারে দিলদারের মেয়ে দুঃখ বলেন,‘ মৃত্যুর প্রথম দুই বছর বাবাকে স্মরণ করা হতো। এখন আমরাই পারিবারিকভাবে স্মরণ করি। চলচ্চিত্র থেকে যারা বাবাকে স্মরণ করার কথা, তারাই দিনটি ভুলে থাকেন। বাবা তার প্রিয় মানুষদের কাছে এত তাড়াতাড়ি মারা যাবেন, ভাবিনি।’
বিপুল জনপ্রিয় অভিনেতা দিলদারের মৃত্যুর পর তার পরিবারের পাশ থেকে যেন আস্থার দেয়াল সরে যায়। চেনা মানুষগুলো অচেনা হয়ে যান। জন্ম বা মৃত্যু দিনে সেভাবে তাকে কেউ স্মরণ করেন না। তাদের সংকটের মুহূর্তেও কাউকে পাশে পাননি।
কথা প্রসঙ্গে জানা গেল, এই অভিনেতা মারা যাওয়ার সময় বিভিন্ন প্রযোজকের কাছে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেতেন। পরিবারের দুঃসময়ে এই টাকা তারা পাননি।
এই বিষয়ে তার বড় মেয়ে বলেন, ‘বাবা কখনো কারও কাছে এক-দুবারের বেশি টাকা চাইতেন না। এ জন্য তিনি বেশির ভাগ সময় পারিশ্রমিক অগ্রিম নিয়ে নিতেন। কিন্তু অনেক সময় পরিচিত, কাছের প্রযোজকদের কাছে অগ্রিম টাকা চাইতেন না।
এভাবে বাবার পাওনা ৮০ লাখ টাকা জমা হয়েছে। ওই সময় প্রযোজকদের কাছ থেকে বাবার পাওয়া ৩৫ লাখ টাকার চেক বাসায় ছিল, সেই টাকাও ওই সময় আমরা পাইনি।’
এই সময় তিনি সুপারহিট ‘আবদুল্লাহ’ ছবির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ছবির প্রযোজকের সঙ্গে বাবার চুক্তি হয়েছিল, যদি ছবিটি সিনেমা হলে চলে, তাহলে তারা বাবাকে ১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দেবেন, ব্যর্থ হলে কোনো টাকা পাবেন না। কারণ, নায়ক হিসেবে বাবাকে নিয়ে প্রযোজক ঝুঁকি নিচ্ছেন। বাবাও রাজি হন
১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ নামের চলচ্চিত্র দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন দিলদার। আর পেছনে ফিরে তাকাননি তিনি। অভিনয় করেছেন ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ‘বিক্ষোভ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘কন্যাদান’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘সুন্দর আলীর জীবন সংসার’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্রে।